স্মার্টফোন হারিয়ে গেলে যে কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে
হঠাৎ করে যদি মনে হয় মোবাইল ফোন বাসায় রেখে আসছি, জ্যামে হারিয়ে ফেলছি কিংবা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন। দেখলেন ফোন পকেটে নেই তো আশেপাশেও নেই। এমন অবস্থায় আপনার পরিস্থিতি কিরুপ হবে সেটা আপনি নিজে অনুভব করতে পারছেন।
আমি জানি এমন পরিস্থিতিতে কারো ভালো থাকার কথা নয়। কারণ, আপনার মোবাইল ফোনটিতে পার্সোনাল অনেক ফাইল আছে, আবার ফোনের সিমটিতে অনেক রিলেটিভ, কলিং, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ জনের ফোন নাম্বার গুলো সংরক্ষিত করা আছে। আবার ফোনটি যদি ভালো ব্যান্ডের দামি ফোন হয় তাহলে তো আরও বেশি টেনশন হাওয়ার কথা।
ফোন হারিয়ে গেলে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। কারণ আপনার ফোন কোথায় আছে তা শনাক্ত করার মতো অনেক অপশন আছে। কারণ বর্তমান দিনে স্মার্টফোনে অনেক ফিচার্স আছে।
তবে এন্ড্রয়েড ফোন হারিয়ে গেলে বা খুঁজে না পেলে কিংবা চুরি হয়ে গেলে ফোনে থাকা গুগলের “ফাইন্ড মাই ডিভাইস” ফিচার ব্যবহার করে আপনার হারানো ফোনটি খোঁজে পেতে পারেন। যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন হারিয়ে যায় বা ছিনতাই হয়ে যায় তাহলে পুলিশ স্টেশনে complaint করার আগে এই পদ্ধতিটি চেষ্টা করতে পারেন।
চলুন জেনে নেয়া যাক, গুগল এর ফাইন্ড ডিভাইস ফিচারটি ব্যবহার করে কিভাবে হারানো ফোন খুঁজে বের করবেন। এছাড়া কীভাবে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি চালু করবেন তাও আলোচনা করা হবে।
গুগল ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি কী?
পূর্বে এই ফিচারটি এন্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার নামে পরিচিত ছিল। গুগল এর ফাইন্ড মাই ডিভাইস অ্যান্ড্রয়েড ফোনসমূহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীগণ তাদের স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও স্মার্টওয়াচ খুঁজে বের করার পাশাপাশি চাইলে তা লক ও করতে পারেন। ফাইন্ড মাই ডিভাইস মূলত গুগল প্লে সার্ভিস ও গুগল প্লে প্রটেক্ট এর একটি বর্ধিত সেবা। যদি কোনো ডিভাইস হারিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ডিভাইসের থাকা ডাটা মুছেও দেওয়া যায় এই ফিচারটি ব্যবহার করে।
হারানো ফোন খুঁজে পাওয়ার পূর্বশর্ত
ফাইন্ড মাই ডিভাইস ব্যবহার করে হারিয়ে যাওয়া এন্ড্রয়েড ফোন যেকোনো মোবাইল বা কম্পিউটারের সাহায্যে খুঁজে বের করা যাবে। পূর্বে এই ফিচার ব্যবহারে ফাইন্ড মাই ডিভাইস অ্যাপটি ইন্সটলের প্রয়োজন হলেও বর্তমানে প্রায় সকল ফোনেই এটি দেওয়াই থাকে। অর্থাৎ সকল অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীই বর্তমানে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি ব্যবহার করতে পারবে।
হারিয়ে যাওয়ার পর যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন খুঁজে পেতে চান, সেক্ষেত্রে আগে থেকেই কিছু বিষয় নিশ্চিত করার প্রয়োজন পড়বে। হারানো ফোন খুঁজে পেতে যেসব বিষয় আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবেঃ
- হারানো ফোন অবশ্যই অন করা থাকতে হবে
- হারানো ফোনে আপনার গুগল একাউন্ট লগিন করা থাকতে হবে
- হারানো ফোনটি ওয়াইফাই বা মোবাইল ডাটাতে কানেক্টেড থাকতে হবে
- ফোনে গুগল প্লে স্টোর চালু থাকতে হবে
- হারানো ফোনের লোকেশন সার্ভিস চালু করা থাকতে হবে
- ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি চালু থাকতে হবে
গুগল ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচার চালু করার নিয়ম
গুগল ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটির সুবিধা পুরোপুরি পেতে হলে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত শর্তসমুহ নিশ্চিত করুন। উপরের শর্তসমুহ ঠিক থাকলে এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি চালু ও ঠিকভাবে সেট করবেন।
গুগল ফাইন্ড মাই ডিভাইস চালু করতে
আপনার ফোনে ওয়াইফাই বা মোবাইল ডাটা চালু করে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হোন। এরপর আপনার ফোনের Settings অ্যাপে প্রবেশ করুন
কিছুটা নিচে স্ক্রল করে Google মেন্যুতে প্রবেশ করুন
এরপর Find My Device অপশনটিতে প্রবেশ করুন
এখন আপনি আপনার ফোনের জন্য ফাইন্ড মাই ডিভাইসটি চালু করে দিতে পারেন। উল্লেখ্য যে আপনার ফোনের সেটিংস অ্যাপে যদি সার্চ করার ফিচারটি থাকে, সেক্ষেত্রে সরাসরি “Find My Device” লিখে সার্চ করেও কাংখিত ফিচারটি খুঁজে নিতে পারবেন।
বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি বিভিন্নভাবে এন্ড্রয়েড কাস্টমাইজ করে থাকে। তাই আপনি আপনার ফোনের জন্য ফাইন্ড মাই ডিভাইস অপশন খুঁজে পেতে একটু সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার ডিভাইস নির্মাতা কোম্পানির সাপোর্টে যোগাযোগ করতে পারেন।
এবার আপনার ফোনে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচারটি আসলেই চালু হয়েছে কিনা, তা বুঝতে গুগল প্লে স্টোরের ডিভাইস স্ট্যাটাস ফিচারটির সাহায্য নিতে পারেন। কোনো ব্রাউজার থেকে play.google.com/settings এ প্রবেশ করুন। সেখানে আপনার গুগল একাউন্টের সাথে যুক্ত ডিভাইসগুলো দেখানো হবে। আপনি যে ডিভাইসটি সবেমাত্র এড করলেন, প্রদর্শিত তালিকাতে সেটি দেখানো হচ্ছে কিনা নিশ্চিত করুন।
যদি উল্লেখিত তালিকায় আপনার ফোন দেখতে না পান, সেক্ষেত্রে ফাইন্ড ডিভাইস সার্ভিসটি অফ করে পুনরায় অন করে দেখতে পারেন।
তবে ফোনে ডিফল ভাবে ফাইন্ড মাই ডিভাইস অপশনটি চালুই থাকে।
হারানো ফোন খুঁজে পাওয়ার নিয়ম
যেহেতু আমরা হারিয়ে যাওয়া ফোন খুঁজে বের করবো গুগল একাউন্টের মাধ্যমে, সেক্ষেত্রে আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট অর্থাৎ জিমেইল এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের মত গুরুত্বপূর্ণ সব কৌশল অবলম্বন করা উচিত। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক, ফাইন্ড মাই ডিভাইস ব্যবহার করে হারানো ডিভাইস খুঁজে পাওয়া নিয়ম।
হারানো মোবাইল খুঁজে পেতে কোনো একটি মোবাইল বা কম্পিউটারে ব্রাউজার থেকে google.com/android/find এ প্রবেশ করুন। এরপর আপানার ফোনে যে গুগল একাউন্ট লগিন ছিলো, সেটিতে লগিন করুন। এরপর ফাইন্ড মাই ডিভাইস আপনার ডিভাসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে। আপনার হারানো ফোনের যদি লোকেশন ঠিক থাকে, সেক্ষেত্রে ম্যাপে আপনার ফোনের অবস্থান স্পষ্টভাবে দেখতে পাবেন।
Android Device Manager Screenshot
ম্যাপে যদি আপনার ফোন দেখতে পান, সেক্ষেত্রে “Play Sound” এ ক্লিক করলে আপনার হারিয়ে যাওয়া ফোন শব্দসহকারে বাজতে শুরু করবে। এভাবে খুব সহজেই আপনার হারিয়ে যাওয়া অ্যান্ড্রয়েড ফোন খুঁজে বের করতে পারবেন।
ফাইন্ড মাই ডিভাইস পেজের স্ক্রিনের উপরের দিকে বা বামদিকে আপনি যে গুগল একাউন্ট লগিন করে আছেন, সেটির সাথে যত ডিভাইস কানেক্টেড আছে, তার তালিকা দেখতে পাবেন। একইসাথে আপনার ডিভাইসের মডেল নেইম, শেষ কখন এটিকে শনাক্ত করা গেছে, এটি কোন নেটওয়ার্কে কানেক্টেড আছে ও অবশিষ্ট ব্যাটারি লাইফ, ইত্যাদি তথ্য দেখা যাবে।
[জানা জরুরী: ধরুন আপনার ফোন চুরি বা ছিনতাই হয়নি কিন্তু আপনার কাছেই আছে। তাও মোবাইল কোথায় রাখছেন খুজে পাচ্ছেন না। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও যদি মোবাইল খুঁজে না পাওয়া যায় এমন অবস্থায় উপরোক্ত বিষয়গুলো প্রায় শতভাগ কার্যকর। তবে চুরি হওয়া বা ছিনতাই হওয়া ফোনে উপরোক্ত বিষয়গুলো কার্যকর নাও হতে পারে এবং হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ তারা ফোনটি বন্ধ করে রাখে]
হারিয়ে যাওয়া ফোন যেভাবে লক করবেন
প্রযুক্তির নিরাপত্তা বিষয়ক ওয়েবসাইট সিকিউরিটিটেক-এর সাইবার সিকিউরিটি বিশ্লেষক এরিক ফ্লোরেন্সের পরামর্শ হলো, আপনার ফোনের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে, ফোনের একটি লক স্ক্রিন হলো অন্যতম সেরা একটি উপায়।
আপনার ফোন হারিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে হারানো ফোন লক করে দিতে পারবেন, যাতে অন্য কেউ আপনার ফোন হাতে পেলেও তা ব্যবহার করতে না পারে। চলুন জেনে নেই, হারানো ফোন লক করার নিয়ম।
হারানো ফোন লক করতে ফাইন্ড মাই ডিভাইস এর ওয়েবসাইট google.com/android/find এ প্রবেশ করে আপনার ডিভাইসটি খুঁজে বের করুন। আপনার ডিভাইসটি খুঁজে পেলে সিকিউর অপশন থেকে Lock এ ক্লিক করুন। এরপর লকস্ক্রিনে দেখানোর জন্য একটি মেসেজ ও ফোন নাম্বার লিখে Lock এ ক্লিক করলেই হারানো ফোন লক হয়ে যাবে। অপর প্রান্তে আপনার হারানো ফোনের স্ক্রিনে আপনার দেয়া মেসেজটি ও ফোন নম্বরটি দেখানো হবে যাতে সহজেই বোঝা যায় যে এটি একটি হারানো ফোন।
হারানো ফোনের ডাটা ডিলিট করার নিয়ম
আপনার ফোন যদি একান্তই ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার খাতিরে উক্ত ফোনে থাকা সকল ডাটা ডিলিট করতে পারেন। মজার ব্যাপার হলো, হারানো ফোনের এই ডাটা মুছা বা ডিলেটের ফিচার আপনার হারিয়ে যাওয়া ফোন অফলাইনে থাকলেও ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে আপনার ফোন অনলাইনে কানেক্টেড হওয়ার সাথে সাথেই রিসেট হয়ে যাবে।
হারানো ফোনের ডাটা ক্লিয়ার বা ডিলেট করতে google.com/android/find এ প্রবেশ করে আপনার ডিভাইসটি খুঁজে বের করুন। এরপর আপনার ডিভাইস খুঁজে পেলে সেখান থেকে Erase এ ক্লিক করুন। এরপর নিশ্চিত করতে Erase বাটনে ক্লিক করলেই অনলাইনে থাকা সাপেক্ষে হারানো ফোনের সকল ডাটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
হারানো বা চুরি হওয়া ফোন খুঁজে পেতে থানায় ডায়েরি (জিডি)
আপনার ফোন হারিয়ে গেলে উপরোক্ত উপায়ে চেষ্টা করে দেখেও যদি কোনো সমাধান না হয়, সেক্ষেত্রে দ্রুত নিকটস্থ থানায় গিয়ে জিডি করতে উপরোক্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমেও যদি ফোনটি খুঁজে পাওয়া না যায় তাহলে তো সমস্যা রয়েই যায়। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে নিকটস্থ থানায় জিডি করুন। কারন আপনার পাসোনাল ফোনটি দিয়ে যদি দুর্ঘটনা ঘটানো হয়। তাহলে এর সমস্ত দায়ভার আপনাকে বহন করতে হবে।
তাই যত দ্রুত পান তাড়াতাড়ি হারানো ফোন । হারানো বা চুরি যাওয়া ফোনের জন্য জিডি করতে প্রয়োজন হবে একটি আবেদনপত্র যে ব্যাপারে থানা থেকে আপনাকে সহায়তা করা হবে।
মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া নিয়ে প্রশ্নোত্তর ( FAQ’s)
মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে করনীয় কি?
যদি উপযুক্ত উপায়ে ফোনটি খুজে না পাওয়া যায় তবে মোবাইল হারালে সর্বপ্রথম কল সেন্টারে যোগাযোগ করে আপনার সিম লক করতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে স্থানীয় থানায় জিডি করতে হবে।
হারানো মোবাইল পেতে জিডি করতে কি কি লাগে?
হারানো মোবাইলের জিডি করতে প্রয়োজন হয়, হারানো মোবাইলের IMEI নাম্বার, সিম নাম্বার, আপনার বর্তমান মোবাইল নাম্বার ও আপনার NID নাম্বার।
পুলিশ কিভাবে হারানো মোবাইল ট্র্যাক করে?
পুলিশ মোবাইলের IMEI নাম্বার দিয়ে হারানো মোবাইল ট্রাক করে। এতে মোবাইল অন করা হলেই তার লোকেশন দেখাবে।
IMEI নাম্বার কি?
IMEI হলো – International Mobile station Equipment Identity. প্রতিটি মোবাইলের আলাদা আলাদা IMEI নাম্বার থাকে। যা দিয়ে মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করা যায়।
মোবাইল চুরি হলে খুঁজে পাওয়ার উপায় কি?
মোবাইল চুরি হলে নিকটস্থ থানায় মোবাইল চুরি হওয়ার জিডি করে পুলিশের সহায়তায় চুরি যাওয়া মোবাইল খুঁজে পেতে পারেন।
হারানো মোবাইলের জন্য থানায় জিডি করতে কোন টাকা লাগে?
না, হারানোর জিডি করতে কোন টাকা লাগে না।
হারানো মোবাইলে যে গুগল একাউন্ট সাইন ইন করা তার পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি, এক্ষেত্রে করণীয় কি?
এক্ষেত্রে গুগল একাউন্ট পাসওয়ার্ড রিসেট করতে হবে। এজন্য ইমেইল একাউন্টে যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছেন সেই সিমটি প্রয়োজন হবে। যদি সেই সিমও হারিয়ে যায়, আগে সিমটি রিপ্লেস করুন, তারপর ইমেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
লোকেশন সার্ভিস বন্ধ থাকলে হারানো ফোন খুঁজে পাওয়া যাবে কি?
আপনার ফোনের লোকেশন সার্ভিস বন্ধ করা থাকলে সেক্ষেত্রে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ঠিকভাবে কাজ করবেনা। তাই ফান্ড মাই ডিভাইস ঠিকমত কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই এই পোস্টে উল্লেখিত পূর্বশর্তসমুহ একে একে অনুসরণ করুন।
হারিয়ে যাওয়া ফোন বন্ধ থাকলে কি খুঁজে বের করা সম্ভব?
হারিয়ে যাওয়া ফোন যদি বন্ধ থাকে, বা অফলাইন থাকে কিংবা, চার্জ শেষ হয়ে যায়; সেক্ষেত্রে “ফাইন্ড মাই ডিভাইস” অ্যাপে ফোনের শেষ আপডেট হওয়া লোকেশন দেখতে পাবেন। খোঁজ শুরু করতে পারেন ফোনের উক্ত সর্বশেষ লোকেশন থেকে।
তবে আপনার ফোন যদি বন্ধ থাকে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু জটিল হতে পারে। বিশেষ করে যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন তাদের জন্য। আপনার ফোনটি হারিয়ে গেলে কী করবেন ফোন হারিয়ে গেলেও আশা হারাবেন না। আপনার প্রিয় ফোনটি যদি বন্ধ না করা হয়, তাহলে খুঁজে বের করার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে।
মোবাইল চোর ধরার উপায়
বিষয়টা এরকম ভাববেন না যে মোবাইল চুরি হয়ে গেছে অথবা ছিনতাই হয়ে গেছে এক্ষেত্রে আপনি নিজে গিয়ে মোবাইল চোরকে ধরবেন। আমি বলতে চাচ্ছি যে ধরেন চোর আপনার মোবাইল চুরি করার জন্য পকেটে হাত ঢুকে মোবাইল বের করতেছে এমন সময় আপনার মোবাইলে সাইলরেন বেজে উঠবে। আপনি তখন বুঝে যাবেন যে মোবাইল চুরি হচ্ছে। আর মোবাইল চুরি হলেও বা ছিনতাই হলেও মোবাইলটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আপনি অন্য ডিভাইস (অন্য ডিভাইস বলতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনকে বুঝায়) দিয়ে করতে পারবেন। এক্ষেত্রে চুরি হওয়ার পর মোবাইল খোঁজার কাজটি আপনাকে খুব দ্রুত করতে হবে।
এজন্য স্মার্টফোন চোরের হাত থেকে সুরক্ষায় ‘থিফগার্ড’ নামে যুগান্তকারী অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ চালু করলো সফটালজি লিমিটেড নামের দেশীয় একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। হারিয়ে যাওয়া ডিভাইস শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে অ্যাপটি। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ এই অ্যাপটি চালু করা হয়েছে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল ফোন চুরি হলে চোরের ছবি ও লোকেশন জানতে সহায়তা করবে অ্যাপটি। এ সময় চোর মোবাইল ফোন বন্ধ করতে পারবে না। চোর মোবাইল ফোনটি কম্পিউটারের সঙ্গে কানেক্ট করতেও পারবে না। মোবাইলের সিম চেঞ্জ করলে মালিককে নতুন সিম নাম্বার জানিয়ে দিবে। অনুমতি ব্যতীত কেউই ডিভাইসে থাকা কোনো ডাটাতে অ্যাক্সেস করতে পারবে না।
মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের কাছে যেকোনো স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থেকে www.thiefguardbd.com ওয়েবসাইটে গিয়ে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলেই চুরি হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের ক্যামেরা চালু করা যাবে এবং চুরি হওয়া মোবাইল থেকে মোবাইলের মালিকের ইমেইলে ছবি পাঠাতে থাকবে। এ সময় জিপিএস অন করে দিলে লোকেশনও পাঠাতে থাকবে।
এই অ্যাপে অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে- মোবাইল ফোনের মালিক চাইলে হারিয়ে যাওয়া ফোনের স্ক্রিন লক করতে পারবেন। এছাড়া যেকোনো সময় ভাইরাস স্ক্যান করতে পারবেন। যেকোনো পাবলিক প্লেসে অন্য কেউ পকেট থেকে মোবাইল বের করতে চাইলে সাইরেন বেজে উঠবে। মোবাইলটা টেবিলে বা চার্জে দিয়ে অন্য কোথাও থাকলে এবং সে সময়ে কেউ মোবাইলটা চার্জ থেকে খুলতে চাইলে তাৎক্ষণিক সাইরেন বেজে উঠবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সঠিক প্যাটার্ন দিয়ে নির্দিষ্ট অপশনে গিয়ে বন্ধ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত অ্যালার্ম বাজতেই থাকবে।
এই অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড-৭ থেকে যেকোনো ভার্সনে ব্যবহার করা যাবে। আপাতত এক বছর ও দুই বছর মেয়াদী এ থিফগার্ড অ্যাপটি সারাদেশের মোবাইল ফোনের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে এই ওয়েবসাইটে।
Post a Comment